মুক্তি সংগ্রামের পক্ষে সংহতি জানিয়ে সমাবেশ করেছে পটুয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যের মেতৃত্বে বিশ্ববিদ্যালয়ের সকল শিক্ষক, কর্মকর্তা-কর্মচারী ও শিক্ষার্থীরা।
সোমবার দুপুর সাড়ে ১২ টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসন ভবনের সামনে এক প্রতীকী সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়।
এসময় শিক্ষার্থীরা ‘নারায়ে তাকবীর আল্লাহু আকবর, ফিলিস্তিনে হামলা কেন জাতিসংঘ জবাব দে’, ‘বিশ্বের মুসলিম এক হও লড়াই করো’, ‚একশন টু একশন ডাইরেক্ট একশন, ইসরাইলের বিরুদ্ধে ডাইরেক্ট একশন’, ‘বিশ্বের মুসলিম এক হও লড়াই করো’, ‘বিশ্ব মুসলিম জাগরে জাগ ফিলিস্তিন মুক্তি পাক’, ‘বয়কট বয়কট ইসরায়েল বয়কট, ফ্রি ফ্রি প্যালেস্টাইন’, ‘স্টপ জেনোসাইড’ ইত্যাদি ¯েøাগানে ফেটে পড়েন।
ডেপুটি রেজিস্ট্রার ড. মোঃ আমিনুল ইসলাম এর সঞ্চালনায় সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখেন মানীয় উপাচার্য অধ্যাপক ড. কাজী রফিকুল ইসলাম। এছাড়া বক্তব্য রাখেন উপ-উপাচার্য অধ্যাপক ড. এসএম হেমায়েত জাহান, ট্রেজারার অধ্যাপক মোঃ আবদুল লতিফ, আইন অনুষদের ডিন অধ্যাপক মোঃ জামাল হোসেন, আর টিসি এর পরিচালক অধ্যাপক ড. মোঃ মামুন অর রশিদ, কৃষি অনুষদের অধ্যাপক ড. শেখ মোঃ আব্দুল্লাহ আল মামুন, কর্মকর্তাদের পক্ষ থেকে জনসংযোগ ও প্রকাশনা বিভাগ এর ডেপুটি ডিরেক্টর মোঃ মাহফুজুর রহমান সবুজ, এনএফএস অনুষদের ছাত্র জয়ভাঙ্গি, আইন অনুষদের খোকন, এমবিএ এর ছাত্র রাতুল, সিএসইর তানভীর হোসেন খান এবং কর্মচারীদের পক্ষ থেকে বক্তব্য রাখেন মোঃ মাহবুবুর রহমান।
সমাবেশে শিক্ষার্থীরা বলেন, আমরা সামনাসামনি দেখতে পাই যে ফিলিস্তিনের উপর এ হামলা করছে ইসরায়েলি দখলদার বাহিনী। কিন্তু ইসরায়েল একার পক্ষে এ হামলা চালানো সম্ভব নয়। ইসরায়েলের পৃষ্ঠপোষকতা করছে আমেরিকা, ইউরোপীয় ইউনিয়ন, বৃটেন এবং ভারত। ইসরায়েলকে বয়কট করার পাশাপাশি এদেরকেও বয়কট করতে হবে। ইসরায়েলের কর্মকান্ডে বোঝা যাচ্ছে তারা আগামীতেও এই গনহত্যা চালিয়ে যাবে। তাই শুধু বিক্ষোভ মিছিল করেই আমাদের কাজ সীমাবদ্ধ রাখলে হবে না। ইতিমধ্যে তৃতীয় বিশ্বযুদ্ধের যে দামামা বেজে উঠেছে তার জন্য আমাদেরকেও শারীরিক এবং মানসিকভাবে প্রস্তুত থাকতে হবে।’
জনসংযোগ ও প্রকাশনা বিভাগের ডেপুটি ডাইরেকটর মোঃ মাহফুজুর রহমান সবুজ বলেন, গাজা উপত্যকা আজ মৃত্যু উপত্যকায় পরিনত হয়েছে। দখলদার ইসরাইল পৃথিবীর মানচিত্র থেকে গাজার চিহ্ন মুছে ফেলতে নারকীয় হত্যাযজ্ঞে মেতে উঠেছে। গত দেড় বছরের আগ্রাসনে পঞ্চাশ হাজার ছয় শত প্রানহানী ঘঠেছে, আহত সোয়া লাখেরও বেশী।
ট্রেজারার অধ্যাপক মোঃ আবদুল লতিফ বলেন, ইসরাইলী গণহত্যার আমরা রাসুল (সাঃ) এর উপদেশ অনুযায়ী তিন ভাবে (হাত, মুখ এবং অন্তর) এর প্রতিবাদ জানাব। তিনি অবিলম্বে এ হত্যাযজ্ঞ বন্ধের আহবান জানান।
উপ-উপাচার্য অধ্যাপক ড. এসএম হেমায়েত জাহান প্রতীকী সমাবেশে অংশগ্রহণকারী সবাইকে ধন্যবাদ জানিয়ে বলেন, মহান আল্লাহ ধৈর্যশীলদের পছন্দ করেন, ইসরায়েলের হামলায় গাজা এখন লোকশুন্য, আমরা নৈতিকতার দিক থেকে তাদের ঘৃনা করব, তিনি দেশের পাসপোর্ট থেকে ইসরায়েলে ভ্রমণে নিষেধাজ্ঞা পুনরায় চালু করার দাবী জানান।
প্রধান অতিথি মাননীয় উপাচার্য অধ্যাপক ড. কাজী রফিকুল ইসলাম তার বক্তব্যে ইহুদিবাদী ইসরায়েল কতৃক গাজায় গণহত্যার প্রতিবাদে আজ যারা অংশগ্রহণ করেছে তাদের সবাইকে ধন্যবাদ জানিয়ে বলেন, যারা পৃথিবীতে মানবতার কথা বলে, শান্তির কথা বলে তারাই আজকে ইসরাইলের মদদদাতা। সারা বাংলাদেশ ইসরাইলের বিরুদ্ধে প্রতিবাদে ফুলে ফেপে উঠেছে। সারাদেশে সাধারন ছাত্র জনতার কাছে এর প্রতিবাদে ঝড় উঠেছে। তিনি দ্ব্যর্থহীনকন্ঠে বলেন, ফিলিস্তিনিদের প্রতি আমাদের সর্বাত্মক সহযোগিতা থাকবে। ইসরায়েল এর কোন পন্য আমরা ঘরে বাইরে কোথাও ব্যবহার করবনা। আজকের সমাবেশ থেকে ইসরায়েলকে বলতে চাই এ মুহূর্তে গণহত্যা বন্ধ করুন নচেত আমাদের শিক্ষার্থীরা গত ২৪ এর জুলাই-আগষ্ট এর মত আন্দোলন করে তোমাদের পরাজিত করে বিজয় অর্জন করবে।
তিনি আরও বলেন, সারা পৃথিবীতে সুধু মুসলিমদেরকেই নির্জাতন ও হত্যা করা হচ্ছে। তিনি সবাইকে সোশ্যাল মিডিয়ার মাধ্যমে ইসরায়েলের এ গণ হত্যার প্রতিবাদ ও নিন্দা জানাতে বলেন।
সমাবেশ শেষে বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় মসজিদে জোহরের নামাজ শেষে গাজা বাসীর জন্য মহান আল্লাহর কাছে সাহায্য ও দোয়া চেয়ে মোনাজাত করা হয়।