কলাপাড়া প্রতিনিধি ঃ পটুয়াখালীর কলাপাড়ায় নব নির্মিত দুটি আধুনিক সুবিধা সংবলিত মুজিব কিল্লা ও তিনটি আশ্রয়ন কেন্দ্রের শুভ উদ্বোধন করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এসময় একই উপজেলায় আরও ৫ টি মুজিব কিল্লার ভিত্তিপ্রস্তর উদ্বোধন করেন তিনি। রোববার সকাল দশটায় ভিডিও কনফারেন্সে গনভবন থেকে এসব প্রকল্পের উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী। এসময় গনভবনে দুর্যোগ ও ত্রাণ মন্ত্রনালয়ের প্রতিমন্ত্রী এনামুর রহমানসহ সরকারের উচ্চ পর্যায়ের কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন। উদ্বোধনকালে কলাপাড়ার চাকামইয়া নেওয়াপাড়া মুজিব কেল্লা প্রান্তে উপস্থিত ছিলেন, জেলা ত্রান ও পুনর্বাসন কর্মকর্তা রনজিৎ কুমার সরকার, কলাপাড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আবু হাসনাত মোহাম্মদ শহীদুল হক, উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা হুমায়ুন কবির এবং জমিদাতা হাকিম আলী তালুকদার।
উল্লেখ্য, ১৯৭০ সালের প্রলয়ঙ্কারী ঝড়-জলোচ্ছাসে ক্ষতিগ্রস্থ মানুষকে সাহায্যের হাত বাড়াতে কলাপাড়ায় এসেছিলেন বঙ্গবন্ধু। ১৯৭২ সালে দুর্যোগকালীন সময়ে মানুষ ও সম্পদ রক্ষায় পটুয়াখালীর কলাপাড়ায় মাটি দিয়ে নির্মিত ২৩টি মুজিব কেল্লাগুলোকে আশ্রয়ের জন্য সংষ্কারের নির্দেশ দেন বঙ্গবন্ধু। পরে আধুনিক যুগের সঙ্গে সঙ্গতি রেখে বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনার নির্দেশে ২০১৮ সালের জুলাই মাসে এসব মুজিব কিল্লায় আধুনিক সুবিধা সম্বলিত ভবন নির্মান কাজ শুরু করা হয়। পুরণো কিল্লার ওপর মাটি ফেলে উঁচু করা হয়েছে। তার ওপর নির্মিত হয়েছে একতলা বিশিষ্ট পাকা অবকাঠামো। এর দু’পাশে তৈরি করা হয়েছে ইট বিছানো পথ। মূল কিল্লায় উঠতেও ইটের পথ রয়েছে। কিল্লার মাটি যাতে ধুয়ে না যায়, সে জন্য সিমেন্টের তৈরি ব্লক ফেলা হয়েছে।
উপজেলার চাকামইয়া ইউনিয়নের নেওয়াপাড়া গ্রামের ষাটোর্ধ শাহআলম তালুকদার খুশি হয়ে বলেন ‘কিল্লাডা হওনে মোগো আশ্রয় নেওয়ার জায়গার অভাব দুর হইছে। ঝড়-বইন্যা হইলে অ্যাহন মোরা এই কিল্লার উপরেই গরু-বাছুর লইয়া আশ্রয় নেতে পারমু।’
স্থানীয় ইউপি সদস্য এবং জমিদাতা হাকিম আলী তালুকদার জানান, নেওয়াপাড়া গ্রামে প্রায় দুই হাজার এবং পূর্ব টিয়াখালী গ্রামে প্রায় দেড় হাজার মানুষের বসবাস। এ গ্রাম দুটিতে কোনো আশ্রয়কেন্দ্র নেই। ঝড়-বন্যার সময় আশ্রয় নেওয়ার অবলম্বন বলতে ছিল একমাত্র মুজিব কিল্লা। ঘূর্ণিঝড় সিডরের সময় নেওয়াপাড়া গ্রামের কিল্লায় আশ্রয় নিতে গিয়ে গ্রামের শিশুসহ তিন জনের মৃত্যু হয়। তিনি আরও জানান, শুধু নেওয়াপাড়া গ্রাম নয়। পাশের কাছিমখালী, গান্ধাপাড়া, আনিপাড়া, কামরাপাড়া ও মৌলভীরতবক গ্রামেরও মানুষও এখন থেকে ঝড়-বন্যার সময় এ কিল্লায় আশ্রয় নিতে পারবে।